বাড়ির ছাদে ককটেল শুকোতে দিয়েছিলেন আ. লীগ কর্মী, বিস্ফোরণ; অতপর…
নিজস্ব প্রতিবেদন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজ বাড়ির ছাদে শুকোতে দেওয়া ককটেল বিস্ফোরণে আহত সেই যুবক ও আওয়ামী লীগ কর্মী সুরুজ (৩৫) এক সপ্তাহ পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনি ইসলামপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পেঁচিপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান ভাদুর ছেলে। গত শুক্রবার (২০ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের শাহাবাগ থানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানাকে বিষয়টি অবগত করলে সদর থানায় এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়।
সেই মামলা সূত্রে ঢামেক হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্তের পর শনিবার (২১ডিসেম্বর) ভোররাতে মরদেহ সুরুজের বাড়িতে এসে পৌঁছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জানাজা নামাজের পর স্থানীয় গোরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) রইস উদ্দিন ও সংশ্লিস্ট ইউপি সদস্য জামিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ইসলামপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পেঁচিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়ির ছাদে বিস্ফোরণে আহত হন সুরুজ।
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুর রহমান বলেন, ‘ওইদিন বিকাল সোয়া ৪টার দিকে সুরুজকে তাঁর স্ত্রী ফেন্সি বেগম (২৫) হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাঁর বাম হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল। এছাড়া পুরো দেহের বিভিন্ন অংশ পোড়া ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশংকাজনক অবস্থায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি রামেক হাসপাতাল থেকে ‘নিখোঁজ’ হন বলে খবর রটে। রামেক কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিশ্চিত করে। অবশ্য তখন স্থানীয় সূত্র দাবি করে, সুরুজ চিকিৎসার জন্য ঢাকা গেছেন। তিন শিশু সন্তানের জনক সেই সুরুজ অবশেষে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় মারা যান।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, একটি বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে গত প্রায় পাঁচ মাস পূর্বে সুরুজের বড়ভাই ফিরোজকে (৪০) মারধর করে নাজিম মেম্বার-সুরুজ প্রমুখের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় একটি গ্রুপ।
উভয় গ্রুপই আ. লীগ সমর্থিত। সেই থেকে সুরুজ গ্রুপের সাথে ওই গ্রুপের উত্তেজনা চলছিল। এরই জেরে সুরুজ বাড়িতে ককটেল মজুদ রাখতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বিস্ফোরণের পর পুলিশ সুরুজের বাড়ির ছাদে বিস্ফোরণের দাগ দেখতে পেলেও কোনো আলামত উদ্ধার করতে পারেনি। ছাদ পানি দিয়ে ধোয়া ছিল। বাড়ি ছিল লোকশুন্য। ফলে পুলিশ তাৎক্ষণিক কথা বলার মতো কাউকে পায়নি। কিছু উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় এতদিন কোনো মামালা না হলেও এখন পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্র – কালের কন্ঠ
Leave a Reply