1. atherabeed4@gmail.com : abeed bhai : abeed bhai
  2. admin@jawabazarerdak.com : ডাক ডেস্ক :
  3. nafisatef94@gmail.com : Nafis Fuad Atef : Nafis Fuad Atef
  4. Kingmusharrof1992@gmail.com : মোশাররফ হোসেন : মোশাররফ হোসেন
  5. abubakarchy97@gmail.com : Siddik Chowdhury : Siddik Chowdhury
আজ সাংবাদিক মুনির হোসেন এর ১৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী - সত্য ও ন্যায় এর কথা বলে
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইউএনও’র বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রতিবাদে ছাতকে সহস্রাধিক মানুষের মানববন্ধন জাউয়া বাজার ডিগ্রি কলেজে নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত ছাতক-দোয়ারাবাজার রুটে ভারতীয় গরু-মহিষের নিরাপদ করিডোর, রমরমা রশিদ বাণিজ্য ছাতকে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় মদসহ আটক তিন মাদক ব্যবসায়ী এক হাতে বাহিনী, অন্য হাতে স্বাবলম্বিতা: আনসার সদস্য হাবিবুর রহমানের সাফল্যের গল্প ঝাড়ু মিছিল গাজীপুরের কালিয়াকৈরে: জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই ছাতকে যুবলীগ নেতা শাহিনের নেতৃত্বে পুলিশের উপর হামলা, দুই সদস্য কুপিয়ে জখম দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা শেষ হয়নি: মিজান চৌধুরী দক্ষিণ সুনামগঞ্জে যুব মহিলা লীগ নেত্রীর বাড়িতে পুলিশি অভিযান ছাতকে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে উপজেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

আজ সাংবাদিক মুনির হোসেন এর ১৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী

নাজমুল হক মুন্না ::
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ১৯২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আজ সাংবাদিক মুনির হোসেন এর ১৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী

নাজমুল হক মুন্না ::আশির দশকের প্রথম দিকে, বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে কলেজ ক্যাম্পাস ও শহরের সড়ক শ্লোগানে যিনি প্রকম্পিত করে তুলতেন তিনি মুনির হোসেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ছাত্রলীগের বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিল মনির হোসেন। সে আমার অনুজ। বরিশালে সাংবাদিকতা জগতে একজন সাহসী যোদ্ধাও ছিল।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ। স্বৈরাচার এরশাদ সরকার ক্ষমতায় এলেন। দেশজুড়ে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় সবাই। সারা দেশের মতো বরিশাল তখন উত্তাল ছিল। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র ও রাজনৈতিক দলের আন্দোলন-সংগ্রাম তখন তুঙ্গে। সেই সময় বিএম কলেজে জাসদ ছাত্র নেতা ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক তিমির দত্ত। মুনির হোসেন তিমির দত্তের ছাত্র রাজনীতিতে শিষ্য ছিল। আর সে তাকে রাজনীতির ওস্তাদ হিসেবে মানতেন।

বরিশালের কাটপট্টি রোড থেকে ১৯৮২ সালের ২৬ মার্চ সাপ্তাহিক “লোকবাণী” পত্রিকার আত্মপ্রকাশ হয়। পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশে প্রচন্ড সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। পত্রিকা বের হওয়ার দিন থেকে আমি স্টাফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করি। রিপোর্ট এডিট করার প্রধান দায়িত্ব পালন করতেন সাংবাদিক আনিসুর রহমান খান স্বপন (আনিস ভাই)। পত্রিকার মফস্বল ও নতুন রিপোর্টারের রিপোর্ট এডিটের দায়িত্ব দিতেন তিনি আমাকে। পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ছিলের দৈনিক সংবাদের জেলা প্রতিনিধি মানবেন্দ্র বটব্যাল (মানব দা)।

পত্রিকা প্রকাশের বছর খানেক পর একদিন রাতে কলেজ-রো নিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান ফারুক তাঁর ছোট ভাই মুনির হোসেনকে পত্রিকা অফিসে নিয়ে এলেন। পত্রিকা ডেস্কে মানবেন্দ্র বটব্যাল, আনিসুর রহমান খান স্বপন, মু, ইসমাইল হোসেন নেগাবান মন্টু, গোপাল সরকার ও আমি উপস্থিত ছিলাম। শ্রদ্ধেয় ফারুক ভাই মুনির হোসেনকে দেখিয়ে মানব দাকে বললেন, ‘এই ডানপিটে, দুষ্টু ছোটভাইকে আপনার হাতে তুলে দিলাম। এখন ভালো করার দায়িত্ব আপনার। এটা আমার এক ভাই হিসেবে দাবি।

মুনির হোসেনের সাংবাদিকতার হাতে খড়ি সাপ্তাহিক লোকবাণী পত্রিকা থেকে। পত্রিকায় রিপোর্ট লিখতো মনের মাধুরি দিয়ে বেশ বড় করে। রিপোর্ট প্রাথমিক পর্যায়ে যতটা সম্ভব ছোট ও সুন্দর করে দিতাম আমি। সেখানে তাঁর মাধুরি মাখা শব্দ অনেকটাই বাদ পড়ে যেতো। এ নিয়ে প্রায়ই আমার বিরুদ্ধে মানব দা’র কাছে অভিযোগ করতো সে। তখন পত্রিকা লেটার প্রেসে অর্থাৎ সীসার তৈরি একটা একটা অক্ষর সাজিয়ে শব্দ ও বাক্য তৈরি করা হতো। পরে ডাইসে মেক-আপ করার পর প্রেসে প্রিন্ট করা হতো। পত্রিকা প্রিন্ট হওয়ার আগে ফাইনাল প্রুফ দেখার দায়িত্বে স্বপন ভাই ও আমি ছিলাম।

দিন যত যায়, মুনির হোসেন রিপোর্ট ছোট করে লেখার কৌশল রপ্ত করে ফেলে। কয়েক মাসের মধ্যে একজন দক্ষ রিপোর্টার হয়ে ওঠে।
পরে বরিশালে এম এ মতিন সাপ্তাহিক “দক্ষিণাঞ্চল” পত্রিকা বের করেন। মুনির হোসের ওই পত্রিকার বার্তা সম্পাদক পদে যোগদান করে। বছর খানেক পর ১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বরে বরিশালে প্রথম দৈনিক হিসেবে দক্ষিণাঞ্চল-এর আত্মপ্রকাশ হয়। মুনির হোসেন দৈনিক দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম বার্তা সম্পাদক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। তখন সে আমাকে পত্রিকার মফস্বল সম্পাদক ও গোপাল সরকারকে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার পদে যোগদানের সার্বিক সহযোগিতা করে। মাসিক  সম্মানী নির্ধারণ ও করে সে। এই থেকেই আমাদের অর্থ উপার্জনের যাত্রা শুরু হয়। যদিও আমার জীবনে দ্বিতীয়।

১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের আমলে বরিশালের হিজলা উপজেলায় হিজলা থানার ওসি’র বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয় খুন্না বাজারের ট্যাকে। আমাকে সেই রিপোর্ট সরেজমিনে করার দায়িত্ব দেয় মুনির হোসেন। বেলা ২ টায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন। ওসিকে উপঢৌকন দেয়া হয় ৮০ সিসির হোন্ডা, সোনার লাঙ্গল, স্বর্নের চেইনসহ অনেককিছু। ওসি সাহেব হোন্ডার গিয়ার স্টার্ট দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিজেই উদ্বোধন করেন।

পরদিন সংবাদটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার প্রকাশিত হয়। রিপোর্টটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ওই দিনই ওসি বরিশালের এসপি সাহেবের সাথে দেখা করেন। এর আগেই তার বিদায় সংবাদের রিপোর্ট এসপি সাহেব পত্রিকায় দেখতে পান। বিকেলে সাক্ষাতের সময় এসপি সাহেব ওসিকে বললেন, “তুমি তো সমাজসেবক হিসেবে কাজ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছো। তোমাকে যে উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়েছে তা সরকারি কোষাগারে জমা দাও। আর তোমার বদলির স্থান বরিশাল জেলা থেকে পাহাড়ি অঞ্চলে দেওয়ার সুপারিশ করছি।”

ওসি সাহেব রাতেই পত্রিকা অফিসে এসে বার্তা সম্পাদক মুনির হোসেনের সাথে দেখা করে বলেন, “পত্রিকায় রিপোর্ট করায় আমার চাকরি জীবনে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে। রিপোর্ট না করলে ভালো হতো না!” মুনির হোসেন তাকে জিজ্ঞেস করল, “রিপোর্টে কোথাও তথ্যগত ভুল বা অতিরঞ্জিত কিছু আছে কি?”

এ প্রশ্নে ওসি সাহেবের কোনো উত্তর নেই। মুখ কালো করে পত্রিকা অফিস থেকে বের হয়ে যান। সেদিন থেকে আমার প্রতি মুনির হোসেনের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়ে যায়। আমার বয়স কিছুটা বেশি হওয়ায় সে আমাকে সব সময় কাজী সাহেব বলে সম্বোধন করতো। আমিও তাকে আদর স্নেহে আবদ্ধ রাখতাম।

এরপর মুনির হোসেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জনতা পত্রিকার বরিশালের জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ পেলেন। ফলে দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার দায়িত্ব ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের বরিশাল জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ হলে সেখানে দায়িত্ব পালন করেন কয়েক বছর। দৈনিক আজকের বার্তা পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে একই সময়ে। সাংবাদিকতায় তার সাহসীকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা ছিল অন্যতম গুণ।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি মুনির হোসেন একজন সংগঠকও ছিল বটে। তিনি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিল। তখন সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দৈনিক বাংলার বরিশাল জেলা প্রতিনিধি সুধীর সেন। বরিশাল কবিতা পরিষদ গঠন হলে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মুনির হোসেন।

উল্লেখ্য, তখন বরিশালে জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠিত হয়নি। বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলো। এরপরে মুনির হোসেনের সম্পাদনায় ম্যাগাজিন হিসেবে সাপ্তাহিক “ইতিবৃত্ত” পত্রিকা বের হয়। পত্রিকাটি লেখার দিক থেকে এক চমক সৃষ্টি করেছিল। বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিল।

স্থানীয় পত্রিকায় বার্তা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকাকালীন সাংবাদিক ও কর্মচারীদের সম্মানী এবং সংবাদ বিষয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তা তড়িৎ গতিতে সমাধান করার চেষ্টা করতো মুনির হোসেন।

২০০৬ সালের ২২ নভেম্বর রাত ১২টা। আমি ও সাংবাদিক গোপাল সরকার পত্রিকার কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। পথিমধ্যে নগরীর ফকিরবাড়ি ও সদর রোডের সংযোগ স্থল সুপার মার্কেটের সামনে মুনির হোসেনের সাথে দেখা হয়। আমাদের সাথে সংবাদপত্র জগৎ, রাজনীতি ও সামাজিক বিষয়ে কথা হয় ঘণ্টা খানেক। এক সময় তিনি আমার উদ্দেশ্যে বললো, “কাজী সাহেব দেহডারে আর কষ্ট দিয়েন না।” আমি আজও যেমনি আছি ১৮ বছর আগে প্রায় একই কাঠামোতে ছিলাম। ওর সাথে কথা বলার তিন দিন পরে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে সেই সাহসী সাংবাদিক ও সংগঠক মুনির হোসেন সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন।

মুনির হোসেনের সড়ক কাঁপানো শ্লোগান আর কখনো শোনা যাবে না। দেখা যাবে না অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। কারো আপদে-বিপদে কাছে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে। ২৫ নভেম্বর সেই মুনির হোসেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। আমি তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

© All rights reserved © jawabazarerdak @Gadgetgallery IT Service

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD